বনী ইসরাইলের মধ্যে তিনজন লোক ছিল। একজন কুষ্ঠরোগী (أَبْرَصَ), একজন মাথায় টাকওয়ালা (أَقْرَعَ) আর একজন অন্ধ (أَعْمى)। মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে পরীক্ষা করার ইচ্ছা মুবারক করলেন। এই লক্ষে তিনি তাদের নিকট একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে প্রেরণ করলেন। হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি মানবীয় আকৃতি ধারণ করে প্রথমে কুষ্ঠরোগীর নিকট আসলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নিকট কোন্ জিনিস অধিক প্রিয়? জবাবে সে বললো- আমি একজন কুষ্ঠরোগী। আমার শরীরের রং ও চামড়া ফ্যাকাশে। এ কারণে মানুষ আমাকে ঘৃণা করে। তাই আমার কাছে অধিক প্রিয় হলো- সুন্দর রং ও সুন্দর চামড়া। হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তার শরীরের উপর উনার হাত মুবারক বুলিয়ে দিলেন। ফলে তার কুষ্ঠ রোগ ভালো হয়ে গেল। তাকে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে শরীরের সুন্দর রং এবং সুন্দর চামড়া দান করা হল। অতঃপর হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ ধরনের সম্পদ তোমার নিকট অধিক প্রিয়?  সে বললো- ‘উট’ । হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তাকে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে একটি দশ মাসের গর্ভবতী উটনী দিলেন এবং বললেন,
يُبَارَكُ لَكَ فِيهَا
“এতে (উটনীর মধ্যে) তোমার জন্য বরকত হোক।”

হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি এখান থেকে বিদায় নিয়ে টাকওয়ালার নিকট গেলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার নিকট কোন্ জিনিস অধিক প্রিয়? জবাবে সে বললো- আমার মাথা টাক বিশিষ্ট হওয়ায় কোনো চুল গজায় না। এ কারণে মানুষ আমাকে ঘৃণা করে। তাই আমার নিকট অধিক প্রিয় হলো- সুন্দর চুল। হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তার মাথায় উনার হাত মুবারক বুলিয়ে দিলেন। সাথে সাথেই তার মাথার টাক দূর হয়ে গেল এবং তার মাথায় সুন্দর চুল গজালো। হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তাকে পুনঃ জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ সম্পদ তোমার নিকট অধিক প্রিয়? সে বললো- ‘গরু’। হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তাকে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে একটি গর্ভবতী গাভী দান করলেন এবং বললেন, 
يُبَارَكُ لَكَ فِيهَا
“এতে (গাভীর মধ্যে) তোমার জন্য বরকত হোক।”

সবশেষে হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি অন্ধ ব্যক্তির নিকট আসলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নিকট কোন্ জিনিস অধিক প্রিয়? জবাবে সে বললো- আমি একজন অন্ধ মানুষ। আমি দুনিয়ার কোনো কিছুই দেখতে পাই না। আমার আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও নিকটতম মানুষ-জন কাউকেই দেখার সৌভাগ্য আমার হয় না। তাই আমার নিকট অধিক প্রিয় হলো- আমার দৃষ্টিশক্তি লাভ করা। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমার চোখের জ্যোতি ফিরিয়ে দেন। তখন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তার চোখের উপর হাত মুবারক বুলিয়ে দিলেন, সাথে সাথেই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন। হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তাকে পুনঃ জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ সম্পদ তোমার নিকট অধিক প্রিয়? সে বললো- ‘ছাগল’। হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি তাকে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে একটি গর্ভবতী ছাগী দিলেন এবং বললেন, 
يُبَارَكُ لَكَ فِيهَا
“এতে (ছাগীর মধ্যে) তোমার জন্য বরকত হোক। ”

এ বলে হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি সেখান থেকে বিদায় নিলেন। পরবর্তিতে কিছুদিনের মধ্যে উক্ত তিন ব্যক্তির পশুগুলো বাচ্চা দিল। সেই বাচ্চাগুলো বড় হয়ে তারাও বাচ্চা প্রসব করলো। এভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাতে এতো বরকত দিলেন যে, একজনের উটে মাঠ ভরে গেল, অপরজনের গরুতে মাঠ ভরে হয়ে গেল এবং আর একজনের ছাগলে উপত্যকা ভরে গেল।